প্রিয় গার্লস! তোমার লাইফ কি একটা গোলকধাঁধা মনে হচ্ছে? স্কুল, পরিবার, বন্ধুত্ব, প্রেম – সব মিলিয়ে যেন একটা মেগা-সিরিয়াল চলছে, যার ডিরেক্টর তুমি নিজেই বুঝতে পারছো না? চিন্তা করো না, আমাদের সবার লাইফেই এমন হয়। কিন্তু, একটা কাজ করো – রামায়ণ থেকে কিছু শেখার চেষ্টা করো! হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছো! তুমি ভাবছো, ‘উফফ, আবার পুরনো ধর্মগ্রন্থের উপদেশ!’ কিন্তু একদম না! রামায়ণের হিরো আর ভিলেনদের কাছ থেকে তুমি এমন কিছু শিখতে পারবে যা তোমার জীবনকে পরিপূর্ণভাবে বদলে দেবে।
তাহলে দেখে নাও, কীভাবে রামায়ণ তোমাকে সঠিক পথে চলতে সাহায্য করতে পারে!
১. নিজের সীমারেখা তৈরি করো – সীতা মায়ের মতো ভুল কোরো না!
তোমার কি কখনও মনে হয়েছে, “আমার বেস্টি আমাকে যা বলছে তাই করলে তো কোনো প্রবলেম হবে না!”? নো, ডার্লিং! মনে আছে, সীতা মা যদি লঙ্কার রাজা রাবণের তৈরি করা চকচকে স্বর্ণহরিণের মোহে পড়ে লক্ষ্মণের সীমারেখা পার না করতেন, তাহলে অপহরণ হতো না? এটাকেই বলে ‘পার্সোনাল বাউন্ডারি’! তাই, অন্যের কথায় ভেবে না দেখে কিছু করো না। নিজের সীমারেখা তৈরি করো, সেটা প্রেম হোক বা বন্ধুত্ব!
২. বুদ্ধি দিয়ে সিদ্ধান্ত নাও – হনুমানজির মাইন্ডসেট ফলো করো!
আমরা কতবার ইমোশনাল হয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি, বলো তো? প্রেমে পড়ে, রাগ করে, বা হুটহাট কিছু বলে ফেলে? হনুমানজি যখন লঙ্কা পুড়িয়ে দিলেন, তখনও তিনি পুরো প্ল্যান করে এগিয়েছিলেন! তুমি যদি একটা সমস্যার মধ্যে পড়ো, আগে মাথা ঠান্ডা রাখো, তারপর ব্রেন ব্যবহার করো। ইমোশনে ভেসে গিয়ে জীবনকে টিকটক ড্রামা বানিয়ে ফেলো না!
৩. তোমার ‘রাবণ’ কে চেনো – সব চকচকে জিনিস সোনা নয়!
রাবণ কি শুধু দশমাথাওয়ালা দুষ্টলোক? নাহ, সে হলো সেই মানুষ, যে বাহিরে একরকম কিন্তু ভেতরে একেবারে ভিন্ন! সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ‘কিউট’ আর ‘কেয়ারিং’ দেখায়, সে রিয়েল লাইফেও তেমন কিনা যাচাই করো! শুধু চকচকে চেহারা বা কথার মিষ্টত্ব দেখে ভুল বোলো না!
৪. রামের মতো ধৈর্য ধরো – ভালো জিনিসের জন্য অপেক্ষা করো!
আমরা এখন ‘ইনস্ট্যান্ট’ যুগে আছি – ইনস্ট্যান্ট নুডলস, ইনস্ট্যান্ট লাভ, ইনস্ট্যান্ট ব্রেকআপ! কিন্তু রামচন্দ্রজি ১৪ বছর বনবাসে ধৈর্য ধরে কাটিয়েছিলেন, শুধুমাত্র নিজের ন্যায়বোধ ধরে রাখার জন্য! তাই, যদি কিছু সময়ের জন্য কিছু না পাও, হতাশ হয়ো না। ভালো জিনিস সময় নিয়ে আসে।
৫. বন্ধু নির্বাচনে সাবধান থাকো – বিভীষণের শিক্ষা নাও!
আমরা অনেক সময় এমন বন্ধু বেছে নিই, যারা পেছন থেকে ছুরি মারে! কিন্তু বিভীষণ? সে ঠিক বুঝেছিল, কোনটা ভুল আর কোনটা ঠিক, আর তার জন্য নিজের দুষ্ট ভাই রাবণের পাশ ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তাই, যদি তোমার কোনো বন্ধু টক্সিক হয়, তার থেকে বেরিয়ে আসো!
৬. মা-বাবার কথা গুরুত্ব দাও – কৌশল্যার মতো ধৈর্য ধরো!
হ্যাঁ, মা-বাবার সব কথা একদম ‘কুল’ শোনায় না। কিন্তু রামের মা কৌশল্যা যে ধৈর্য ও বিশ্বাস রেখেছিলেন, সেটাই তাকে সেরা মা বানিয়েছে। তাই, হুট করে তাদের কথাকে ‘ওল্ড-স্কুল’ ভেবে উড়িয়ে দিও না!
৭. মিথ্যা বলো না – কৌশল চালেও সফলতা আসে না!
রাবণ তার ক্ষমতা দেখিয়ে, মিথ্যা বলে, ধোঁকা দিয়ে সব জিততে চেয়েছিল, কিন্তু কী হয়েছিল? শেষমেশ সে সব হারিয়েছিল! তাই, তুমি যদি পরীক্ষায় বা জীবনে সফল হতে চাও, শর্টকাট বা মিথ্যা বলার চেষ্টা করো না। শেষমেশ ধরা পড়তেই হবে!
৮. নারীদের সম্মান করো – রামের শিক্ষা নাও!
রাম ছিলেন সেই ব্যক্তি, যিনি কখনও কোনো মহিলার অসম্মান করেননি। তার মতো হও! শুধু নিজের জন্য নয়, অন্য নারীদের জন্যও আওয়াজ তুলো! অন্য মেয়েদের সমালোচনা করে নিজেকে ভালো দেখানোর চেষ্টা করো না।
৯. কাজের প্রতি নিষ্ঠা রাখো – হনুমানের ডেডিকেশন ফলো করো!
যেকোনো কাজে মন দাও! হনুমানজির মতো ফোকাসড হও! হোমওয়ার্ক, ক্যারিয়ার, সম্পর্ক – যা কিছু করো, সেটা মন দিয়ে করো। ‘চলবে’ টাইপ মনোভাব রাখলে সাফল্য আসবে না!
১০. নিজের শক্তি জানো – সীতার মতো সাহসী হও!
যদি কখনও মনে হয় তুমি দুর্বল, মনে রেখো, সীতা মা একা রাবণের প্রাসাদে থেকেও ভেঙে পড়েননি! মেয়েদের ভেতরে যে অদম্য শক্তি আছে, সেটা জানো। কেউ যদি তোমাকে ছোট করে, বলে তুমি পারবে না – প্রমাণ করে দাও যে তুমি পারো!