তুমি কি প্রতিদিনের রুটিন গুছিয়ে নিতে পারছো না? সোশ্যাল মিডিয়ার স্ক্রলিং আর রাত জাগা ছাড়া জীবনে আর কিছুই হচ্ছে না? তোমার ইচ্ছাশক্তি ঠিক যেন রাবণের মতো ১০টা মাথা নিয়ে দোদুল্যমান? তাহলে এখনই বদলাও! কারণ রামায়ণ শুধু যুদ্ধের গল্প না, এটি জীবন গঠনের একটি হ্যান্ডবুকও বটে।
তাহলে দেরি না করে দেখে নেওয়া যাক ৮টি জাদুকরী উপায়, যা তোমার জীবন পাল্টে দেবে!
১. রামের মতো ডিসিপ্লিনড হও
রাম তাঁর জীবনে যত প্রতিকূল পরিস্থিতিই আসুক না কেন, কখনো নিয়মানুবর্তিতা হারাননি। তিনি ১৪ বছরের বনবাসে গিয়েও আদর্শ বজায় রেখেছেন। তুমি কি প্রতিদিন প্ল্যান করেও পড়াশোনা বা এক্সারসাইজ মিস করছো? তাহলে এখনই সিদ্ধান্ত নাও, একটা ফিক্সড রুটিন বানিয়ে সেটার প্রতি অটল থাকো!
করণীয়: সকালে উঠেই একটা ছোট্ট To-Do লিস্ট তৈরি করো, আর তা ফলো করো।
২. হনুমানের মতো ফোকাসড হও
হনুমান যখন সীতা মা-কে খুঁজতে লঙ্কায় গিয়েছিলেন, তখন তাঁর লক্ষ্য একদম স্পষ্ট ছিল। আজকাল আমাদের মন এতটাই ডিসট্র্যাক্টেড যে পড়তে বসলে ইনস্টাগ্রামের নোটিফিকেশনই মূল আকর্ষণ হয়ে দাঁড়ায়।
করণীয়: পড়ার সময় ফোন ‘Do Not Disturb’ মোডে রাখো এবং একটানা ২৫ মিনিট কাজ করে ৫ মিনিট ব্রেক নাও (Pomodoro Technique ট্রাই করো)!
৩. লক্ষ্মণের মতো ডেডিকেশন রাখো
লক্ষ্মণ তাঁর ভাইয়ের প্রতি এতটাই একনিষ্ঠ ছিলেন যে ১৪ বছর রাজকীয় জীবন ছেড়ে বনবাসে গিয়েছিলেন। আর তুমি কি প্রতিদিন জিমে যাওয়ার প্ল্যান করেও বিছানা ছাড়তে পারো না? এই অলসতা এবার ছাড়ো!
করণীয়: নিজের লক্ষ্যগুলোর জন্য কমিটেড থাকো এবং “একদিন করবো” বলার বদলে “আজই শুরু করছি” বলো!
৪. সীতার মতো ধৈর্য ধরো
সীতা মা-র ধৈর্যের পরীক্ষা কম হয়নি! কিন্তু তিনি কখনোই নিজের আত্মবিশ্বাস হারাননি। আমরা কিন্তু একটু ট্র্যাজিক ব্রেকআপ হলেই মুষড়ে পড়ি।
করণীয়: জীবনে ধৈর্য ধরো এবং প্রতিটা চ্যালেঞ্জকে একটা নতুন সুযোগ হিসেবে দেখো।
৫. রাবণের মতো লোভী হয়ো না (কিন্তু তার বুদ্ধি নাও!)
রাবণ যদি নিজের অহংকার আর লোভ একটু নিয়ন্ত্রণ করতেন, তাহলে হয়তো রামায়ণের গল্পটা অন্যরকম হতো! তোমারও কি শপিং আসক্তি আছে? বা খাওয়ার সময় “শেষ পিসটা আমার” বলতে ভালো লাগে? তাহলে এবার একটু সংযত হও।
করণীয়: বাজেট মেইনটেইন করো, অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার আগে ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করো, এবং সচেতন জীবনযাত্রা গড়ে তোলো।
৬. জটায়ুর মতো ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াও
জটায়ু যখন দেখলেন রাবণ সীতাকে অপহরণ করছে, তিনি নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও লড়াই করেছিলেন। তুমি কি অন্যায় দেখলে এড়িয়ে যাও? স্কুলে বা কলেজে কেউ বুলিং করলে চুপ করে থাকো? এটা কিন্তু ঠিক না!
করণীয়: অন্যায়ের বিরুদ্ধে কণ্ঠ তুলতে শেখো, নিজের এবং অন্যদের অধিকার রক্ষা করো।
৭. বিভীষণের মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নাও
ভাই হওয়া সত্ত্বেও বিভীষণ অন্যায়কে সমর্থন করেননি, বরং ন্যায়ের পথে ছিলেন। তুমি কি নিজের জীবন নিয়ে কনফিউজড? কোন ক্যারিয়ার নেবে, কোন সাবজেক্ট পড়বে বুঝতে পারছো না?
করণীয়: ইমোশন নয়, লজিক দিয়ে সিদ্ধান্ত নাও। কোনো কিছুর ভালো-মন্দ বিচার করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নাও।
৮. নল-নীলের মতো সমস্যা সমাধান শেখো
নল ও নীলকে শুরুতে সবাই পাত্তা দিত না, কিন্তু তাঁরাই রাম সেতু বানিয়েছিলেন! আমাদের জীবনেও অনেক সমস্যা আসবে, কিন্তু সেগুলো থেকে পালিয়ে গেলে চলবে না।
করণীয়: কোনো সমস্যা এলে সেটার সমাধানের উপায় খুঁজো, দোষারোপ করার অভ্যাস বাদ দাও।
এখনই শুরু করো!
রামায়ণ শুধুমাত্র অতীতের গল্প নয়, এটি আমাদের জীবনের জন্য এক বিশাল শিক্ষা। এই ৮টি অভ্যাস যদি তুমি রপ্ত করতে পারো, তাহলে তোমার জীবন পুরো পাল্টে যাবে!