তুমি কি কখনো এমন অনুভব করেছ যে অন্যের কথায় তোমার মন ভেঙে যাচ্ছে? কেউ বলল, “তুমি এটা পারবে না,” বা “তোমার চেহারা সুন্দর নয়,” আর তুমি পুরো দিন সেটা ভেবে মন খারাপ করে বসে আছো? STOP!
তুমি একা নও। এমন পরিস্থিতি সীতাদেবী থেকে শুরু করে হনুমান পর্যন্ত সবাই মোকাবিলা করেছেন! হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছ। রামায়ণের চরিত্ররা আমাদের দেখিয়েছে কীভাবে নিন্দুকদের কথায় মন খারাপ না করে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা যায়।
তাহলে চল, দেখে নেওয়া যাক সেই ৮টি কৌশল, যা অন্যের কথায় হতাশ হওয়া থেকে তোমাকে বাঁচাবে!
১. তোমার মূল্য অন্য কেউ ঠিক করবে না!
রাবণ যখন সীতাকে অপহরণ করেছিল, তখন সে চেয়েছিল সীতা তাকে ভালোবাসুক। কিন্তু সীতা কি রাবণের কথায় ভেঙে পড়েছিলেন? না! তিনি জানতেন, তার মূল্য অন্য কেউ ঠিক করতে পারে না। তাই যখন কেউ তোমাকে নিচু দেখানোর চেষ্টা করবে, মনে রেখো—তুমি তোমার নিজের মূল্যবান রত্ন!
২. বোকাদের কথায় কান দিও না (অর্থাৎ, মন কে ব্লক করো!)
লক্ষ্মণ যখন শূর্পনখার প্রেম প্রত্যাখ্যান করেছিল, তখন সে রেগে গিয়ে সীতা ও রামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল। অনেকেই তোমার সাফল্য বা সুখ দেখে হিংসে করবে, তাই তাদের কথা শুনে দুঃখ পেও না। শুধু তোমার লক্ষ্যে ফোকাস করো!
৩. ধৈর্য ধরো, প্রতিশোধ নয়
বালিকে বিশ্বাস করে সুগ্রীব বড় ভুল করেছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি সুগ্রীব ধৈর্য হারিয়েছিলেন? না! তিনি ধৈর্য ধরে রামের সাহায্য চেয়েছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয়েছিলেন। তাই কেউ তোমাকে কষ্ট দিলে সঙ্গে সঙ্গে রিঅ্যাক্ট করো না। সঠিক সময়েই তুমি তোমার জবাব দেবে, ততক্ষণ নিজেকে আরও শক্তিশালী করো।
৪. নিজেকে প্রমাণ করতে ব্যস্ত হও, সমালোচকদের সন্তুষ্ট করতে নয়
হনুমানকে যখন সবাই অবহেলা করত, তখন তিনি কি সময় নষ্ট করেছিলেন সবাইকে সন্তুষ্ট করতে? একদম নয়! তিনি তাঁর ক্ষমতা কাজে লাগিয়েছিলেন এবং সীতা মাতাকে খুঁজে বের করার জন্য বিশাল সমুদ্র পেরিয়ে গিয়েছিলেন। তাই, নিজের কাজ করো, অন্যের কথায় নিজের শক্তি নষ্ট কোরো না!
৫. সত্যের শক্তিকে বিশ্বাস করো
রামের বনবাসের সময় অনেকেই বলেছিল, “রাজা হয়ে এভাবে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো মানায়?” কিন্তু তিনি জানতেন, সত্যের পথে হাঁটলে শেষ পর্যন্ত জয় আসবেই। তাই, অন্যরা তোমার স্বপ্ন বা বিশ্বাস নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেও, তুমি তোমার সত্যিকারের পথেই থাকো।
৬. যারা তোমার পাশে নেই, তাদের নিয়ে মাথা ঘামিও না!
বিভীষণ তাঁর ভাই রাবণকে ছেড়ে রামের দলে চলে গিয়েছিলেন। সবাই তাঁকে বিশ্বাসঘাতক বলেছিল, কিন্তু তিনি জানতেন কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল। তাই, তোমার আশেপাশে যারা সত্যিকারের ভালো বন্ধু নয়, তাদের নিয়ে মাথা ঘামিও না। তোমার জন্য সত্যিকারের মানুষরাই তোমার পাশে থাকবে।
৭. নিজের আত্মবিশ্বাস নিজের হাতেই রাখো
রাম যখন সীতা মাতাকে অগ্নিপরীক্ষার কথা বলেছিলেন, তখনও সীতা ভেঙে পড়েননি। তিনি জানতেন, তাঁর চরিত্র ও সতীত্ব কেবল তিনিই জানেন। তাই যখন কেউ তোমার সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি করতে চায়, নিজের আত্মবিশ্বাসকে ধরে রাখো। কারণ সত্যিটা একদিন প্রকাশ পাবেই!
৮. তোমার গল্প তুমি নিজেই লিখবে!
রাবণ চেয়েছিল তার শক্তির গল্প চিরকাল টিকে থাকুক, কিন্তু বাস্তবে মানুষের মনে রামের শাসন ও ন্যায়বিচারের গল্প রয়ে গেছে। তোমার জীবন নিয়ে অন্যরা যা খুশি বলুক, শেষ পর্যন্ত তোমার কাজ, চরিত্র ও মনোভাবই তোমার গল্প লিখবে!