সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জীবন এক যুদ্ধক্ষেত্র! ইনস্টাগ্রামে পারফেক্ট দেখানো, পড়াশোনার চাপ সামলানো, ফ্যামিলির হাজারটা এক্সপেকটেশন, আর তার মধ্যে নিজের জন্য একটু সময় বের করা, ব্যাস, মাথার চুল ছিঁড়ে ফেলার অবস্থা! কিন্তু জানেন কি, এই সমস্যা গুলোর সমাধান হাজার বছর আগেই লেখা হয়ে গেছে? হ্যাঁ, আপনি ঠিকই ধরেছেন! রামায়ণ শুধুমাত্র পুরনো দিনের গল্প নয়, বরং এখানে লুকিয়ে আছে কিছু লাইফ হ্যাক, যা আপনাকে প্রতিদিন শক্তিশালী করে তুলবে!
চলুন, দেখে নিই ৮টি শক্তিশালী কৌশল, যা রামায়ণ থেকে শিখতে পারেন:
১. সীতা-সিন্ড্রোম থেকে বেরিয়ে আসুন!
সীতা মা ছিলেন কোমল, কিন্তু তার মানে এই নয় যে তিনি দুর্বল ছিলেন! তিনি ছিলেন আত্মনির্ভরশীল, সাহসী, আর ধৈর্যশীল। কিন্তু আজকের দিনে আমরা অনেকেই ‘সীতা-সিন্ড্রোম’-এ ভুগছি, অর্থাৎ, অন্যদের জন্য সবকিছু করি, কিন্তু নিজেদের কথা ভাবি না! STOP IT! নিজের জন্য সময় নিন, নিজের ভালো-মন্দ আগে ভাবুন! শক্তিশালী হতে গেলে আগে নিজেকেই ভালোবাসতে হবে!
২. রামের মতো ডিসিপ্লিন রাখুন!
রাম শুধু একজন রাজা নন, তিনি ছিলেন সেলফ-কন্ট্রোলের মাস্টার! আজকাল তো ডিসিপ্লিন ছাড়া কিছুই সম্ভব না, ফিটনেস হোক, পড়াশোনা হোক, বা ক্যারিয়ার! নিজের জন্য একটা রুটিন তৈরি করুন এবং সেটাকে ফলো করুন।
৩. হনুমানের মতো সাহসী হন!
হনুমান যদি ভয় পেতেন, তাহলে কি তিনি সীতাকে লঙ্কায় খুঁজে পেতে পারতেন? NO WAY! তাই আপনিও যদি জীবনে বড় কিছু করতে চান, তাহলে সেই ভয়ের দেওয়াল ভেঙে বেরিয়ে আসতে হবে! আজ থেকে যেকোনো চ্যালেঞ্জকে হনুমানের চোখ দিয়ে দেখুন, আপনি সবকিছু পারবেন!
৪. মন কে ‘রাবণ’-এর হাত থেকে বাঁচান!
রাবণ ছিলেন একজন প্রতিভাবান, জ্ঞানী ব্যক্তি। কিন্তু তার একটাই সমস্যা ছিল, অহংকার! আজকের যুগে অহংকার মানে কী? সোশ্যাল মিডিয়ায় সবসময় পারফেক্ট দেখানোর চেষ্টা করা, অন্যদের দেখিয়ে দেয়া যে আপনি কতো ভালো আছেন! এটা আপনাকে কেবল মানসিক চাপ দেবে, শক্তি নয়! নিজেকে অন্যদের সাথে তুলনা করবেন না, নিজের উন্নতির দিকে মন দিন।
৫. সুগ্রীবের মতো বন্ধু নির্বাচন করুন!
বন্ধুত্ব আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর একটি। ভুল বন্ধু হলে জীবন একেবারে ধ্বংস! রামের জীবনে সুগ্রীবের মতো বন্ধু ছিল, যিনি তাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতেন। তাই এমন বন্ধু বেছে নিন, যারা আপনাকে সত্যিকারের শক্তিশালী বানাবে, কেবল গসিপ আর নেগেটিভিটি ছড়াবে না!
৬. সবসময় নিজের লক্ষ্যে ফোকাস রাখুন, যেমন ভরত!
ভরত যখন জানলেন যে রামের জন্য সিংহাসন ঠিক নয়, তখন তিনি নিজে সিংহাসনে বসার লোভ না করে রামের খড়ম নিয়ে সিংহাসন চালালেন! আজকের যুগে ফোকাস নষ্ট করা খুবই সহজ, ননস্টপ নোটিফিকেশন, গসিপ, স্ক্রোলিং! যদি সত্যি শক্তিশালী হতে চান, তাহলে নিজের লক্ষ্যে ফোকাস করুন এবং অপ্রয়োজনীয় বিষয় থেকে দূরে থাকুন।
৭. নিজের আত্মসম্মান বজায় রাখুন, যেমন মন্দোদরী!
রাবণের স্ত্রী মন্দোদরী জানতেন যে তার স্বামীর কাজ ভুল, কিন্তু তাও তিনি শক্ত ছিলেন। তিনি নিজেকে হারিয়ে ফেলেননি, নিজের আত্মসম্মান বজায় রেখেছিলেন। আপনারও উচিত নিজের আত্মমর্যাদা বজায় রাখা, অন্যদের কথায় নিজেকে ছোট মনে না করা!
৮. নিজের ‘ধনুষ’ নিজেই তুলুন!
সীতা-স্বয়ম্বরের সময়, রামের মতো কেবল তিনিই ধনুষ তুলতে পেরেছিলেন, কারণ তিনি ছিলেন প্রস্তুত! তাই জীবনে যদি বড় কিছু পেতে চান, তাহলে সবসময় নিজেকে তৈরি করুন। পড়াশোনা, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, আত্মবিশ্বাস, এসব আপনার অস্ত্র!