৮টি সত্য যা নারী হয়ে শক্তিশালী হতে আপনাকে সাহায্য করবে রামায়ণ কী বলে

সতর্ক করলাম, এই ব্লগটা পড়লে আপনি শুধু “নারী” থাকবেন না ,  আপনি “নারীশক্তি” হয়ে উঠবেন! আজকাল সোশ্যাল মিডিয়াতে সব মেয়ে চাই “queen energy”, “independent vibes”, আর “self-love glow”. কিন্তু জানেন কি, রামায়ণে এইসব পাওয়ারফুল vibes আগে থেকেই ছিল?

রামায়ণ শুধু সীতা হরণ আর রাম-রাবণের যুদ্ধ নয়, এটি এক বিশাল গাইডবুক ,  নারীদের আত্মবিশ্বাস, আত্মশক্তি ও আত্মমর্যাদার জন্য। আজকে আমরা দেখব ৮টা বাস্তব সমস্যা ,  যেগুলো আপনি, আমি, আমরা সবাই ফেস করি ,  আর সেই সমস্যার সুপারহিরো সলিউশন কীভাবে রামায়ণে আছে!

১. “আমাকে কেউ গুরুত্ব দেয় না!” ,  তখন সীতা কী করতেন?

আজকাল বন্ধুরা রিল পোস্ট করে, আপনাকে ট্যাগই দেয় না? বয়ফ্রেন্ডের প্রায়োরিটি লিস্টে আপনার নাম তো রিমুভ হয়ে গেছে বহুদিন!

সীতা দেবীর গল্পে দেখুন, অযোধ্যার রাজপ্রাসাদ, সোনার জীবন, সব ছেড়ে স্বামীর পাশে রাম বনবাসে গেলেন। তবে যখন সমাজ তাঁকে অসম্মান করল, তিনি কী করলেন? স্ব-সম্মান ধরে রাখলেন। সন্তান জন্ম দিয়ে বনেই থেকেছেন ,  প্রমাণ দিলেন: নারী চায় না শুধু ভালোবাসা, চায় সম্মান।

 টেকওয়ে: নিজেকে ছোট মনে করবেন না। যারা আপনাকে গুরুত্ব দেয় না, তাদের জন্য নিজের গুরুত্ব হারাবেন না।

২. “তুমি একটু কম সাজলে ভালো হবে!” ,  উর্মিলার স্টাইল গেম!

না! সবাইকে সাজতে হবে না। উর্মিলা, লক্ষ্মণের স্ত্রী, স্বামীর বনবাসে যাওয়ার পর ১৪ বছর নিজের ঘরেই তপস্যায় বসেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ার মতো লাইক না পেয়ে, তিনি নিজের inner glow বাড়িয়েছিলেন।

 টেকওয়ে: বিউটি শুধু বাহিরে নয়, ভিতরেও গড়ে ওঠে। সব সময় মেকআপ নয়, মাইন্ড-মেকআপ দরকার।

৩. “সবাই বলে, মেয়েরা জেদি হলে বিয়ে হয় না!” ,  শূর্পণখার বিপরীত শিক্ষা

শূর্পণখা রাবণের বোন ,  হ্যাঁ, তিনি নেতিবাচক চরিত্র, কিন্তু সাহসী তো ছিলেন! যখন ভালো লাগলো, সরাসরি প্রপোজ করে দিলেন রামকে। রিজেক্টও পেলেন, কিন্তু নিজের ইচ্ছে প্রকাশে দ্বিধা করেননি।

 টেকওয়ে: অনুভূতি লুকিয়ে রাখবেন না। আপনি যা চান, সেটা বলতে শিখুন। নিজে হতে সাহসী মানেই আপনি কম “নারী” নন।

৪. “সবাই বলছে, আমি বেশি চুপচাপ!” ,  তখন মাণ্ডবীর মতো হোন

বালি হত্যার সময়, একজন নারী ঋষি ছিলেন মাণ্ডবী, যিনি সঠিক-ভুল নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলেছিলেন রামকে। তিনি চুপ ছিলেন না, নিজের যুক্তি দিয়েছিলেন।

 টেকওয়ে: চুপ থাকা সবসময় নম্রতা নয়। যখন অন্যায় দেখবেন, শান্ত স্বরে জোর গলায় বলুন

৫. “ব্রেকআপের পর ভেঙে পড়েছি” ,  সীতার FIRE MODE অন করুন!

রাবণ সীতাকে অপহরণ করেছিল। তাঁর জীবন থেমে গিয়েছিল, কিন্তু নিজেকে ভেঙে পড়তে দেননি। অশোকবনে বসে থেকেছেন, অথচ মানসিকভাবে ছিলেন শক্তিশালী।

 টেকওয়ে: সম্পর্ক শেষ হলে জীবন শেষ নয়। নিজেকে হারাবেন না। আপনার ভেতরের আগুনটাকে জ্বালিয়ে রাখুন।

৬. “আমার কথা কেউ শোনে না!” ,  ক্যারিয়ার ড্রপ? না না, কৌশল বুঝুন মন্দোদরী থেকে!

মন্দোদরী ,  রাবণের স্ত্রী, কিন্তু নিজে ছিলেন অত্যন্ত বুদ্ধিমতী। যুদ্ধ নিয়ে রাবণকে বারবার সতর্ক করেছিলেন। তিনি রাজনীতির, ধর্মের ও যুদ্ধনীতির গভীর জ্ঞান রাখতেন।

 টেকওয়ে: আপনি নারী বলেই সব সময় পিছনে থাকতে হবে ,  এটা ভুল! জ্ঞান, যুক্তি ও কৌশলে আপনি যেকোনো টেবিলে বসতে পারেন।

৭. “লোকে কি ভাববে?” ,  তাড়া দিন সেই ভয়কে, যেমন কৌশল্যা করেছিলেন!

কৌশল্যা ,  রামের মা, বহুবার রাজনীতি, হিংসা, অপবাদ সহ্য করেছেন। কিন্তু মায়ের মতো সংযত থেকেও নিজের অবস্থান দৃঢ় করেছেন। সবার সামনে শক্ত ও স্থির থাকতেন।

 টেকওয়ে: সবকিছুর উত্তর না দিলেও, নিজের সম্মান ভুলবেন না। “কি বলবে লোকে?” এই প্রশ্ন ভুলে যান। বরং ভাবুন, “আমি নিজেকে কী বলি?”

৮. “আমি যথেষ্ট ভালো না!” ,  তখন হনুমানের মতো বন্ধু খুঁজুন

আপনি জানেন না, আপনি কতটা শক্তিশালী ,  যতক্ষণ না কেউ আপনাকে সেটা অনুভব করায়। হনুমান ছিলেন সীতা ও রামের পাশে এমন একজন বন্ধু, যিনি বলতেন: “তুমি পারবে।”

 টেকওয়ে: নিজের চারপাশে এমন মানুষ রাখুন, যারা আপনার শক্তি বাড়ায়, সন্দেহ নয়।

 শেষ কথা: আপনি শুধুই “নারী” নন, আপনি একেকজন যোদ্ধা, দার্শনিক, মা, প্রেমিকা, কৌশলী রাণী, এবং অগ্নিস্মিতা! রামায়ণ আপনাকে শেখায় ,  নারীত্ব মানেই দুর্বলতা নয়, বরং অপার শক্তির উৎস।

 এবার আপনি বলুন!
এই ৮টা পয়েন্টের মধ্যে কোনটা আপনার জীবনে সবচেয়ে বেশি রিলেট করে? কমেন্টে জানান, আর শেয়ার করুন সেই বন্ধুটার সাথে, যাকে আজ একটু “inner সীতা” জাগানোর দরকার!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top