৫টি উপায় যা নারীদের সাহসী হতে শেখাবে রামায়ণ কী বলে?

তুমি কি কখনও এমন পরিস্থিতিতে পড়েছ যেখানে তুমি ‘না’ বলতে চেয়েও পারোনি? অথবা নিজের স্বপ্নের পেছনে ছুটতে গিয়ে সমাজের চোখরাঙানি সহ্য করেছ? বন্ধু, এটা এখন থামাতে হবে! আমরা নারীরা যুদ্ধক্ষেত্রেও লড়াই করেছি, রাজ্য শাসন করেছি, আর পুরো বিশ্ব বদলে দিয়েছি। কিন্তু সাহসের এই শিক্ষা কি শুধু আধুনিক যুগের বিষয়? একদম নয়!

রামায়ণ, যেটা প্রায় হাজার হাজার বছর পুরনো, সেখানে এমন অসাধারণ নারীরা ছিলেন, যাঁরা সাহসের মূর্ত প্রতীক! তুমি যদি সত্যিকারের সাহসী হতে চাও, তাহলে এই মহাকাব্য তোমার জন্য এক অসাধারণ গাইডবুক হতে পারে। চল, দেখি রামায়ণের নারীরা আমাদের কী শিখিয়েছেন!

১. নিজের কণ্ঠস্বর খুঁজে পাও – সীতা তোমাকে কী শেখায়?

সীতা শুধু ‘দুঃখী রাজকন্যা’ নন! যখন রাবণ তাঁকে অপহরণ করে, তখন তিনি ভয়ে নিশ্চুপ হয়ে যাননি। তিনি তাঁর আত্মসম্মান রক্ষা করেছেন, রাবণের সব লোভনীয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং নিজের নীতিতে অবিচল থেকেছেন।

 তোমার শিক্ষাঃ যখন কেউ তোমাকে ছোট করে, তোমার স্বপ্ন বা আত্মসম্মান নিয়ে খেলা করতে চায় – প্রতিবাদ করো! নিজের কণ্ঠস্বর খুঁজে পাও এবং তা দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করো!

২. নরম হও, কিন্তু দুর্বল নও – মন্দোদরীর মতো বুদ্ধিমতী হও

মন্দোদরী ছিলেন রাবণের স্ত্রী, কিন্তু তিনি তাঁর ভুল সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে পিছপা হননি। তিনি চেষ্টা করেছিলেন রাবণকে বোঝাতে যে সীতাকে ফেরত দেওয়া উচিত।

 তোমার শিক্ষাঃ তুমি যদি কাউকে ভালোবাসো, তবে তাদের ভুলকে সমর্থন করো না। সত্যের পাশে দাঁড়াও, এমনকি যদি তা কঠিন হয়!

৩. সাহসী হতে চাইলে নিজের শক্তি চিনতে শিখো – ত্রিজটাকে ভুলে গেছো?

ত্রিজটা ছিলেন একজন রাক্ষসী, কিন্তু তিনি ছিলেন সীতার পাশে! লঙ্কায় যখন সবাই সীতাকে ভয় দেখাচ্ছিল, তখন তিনিই সাহস জুগিয়েছিলেন, এবং বলেছিলেন – রাম অবশ্যই তাঁকে উদ্ধার করবেন।

 তোমার শিক্ষাঃ যদি চারপাশে সবাই তোমার স্বপ্নকে অসম্ভব বলে, তবু তুমি নিজেকে বিশ্বাস করো! তোমার শক্তি তোমার নিজের হাতেই!

৪. নিয়ম ভাঙতে ভয় পেও না – শূর্পনখা আমাদের কী শেখায়?

শূর্পনখাকে নিয়ে আমাদের সমাজে নানা নেতিবাচক কথা প্রচলিত। কিন্তু, জানো কি? তিনি ছিলেন সেই নারী, যিনি নিজের ভালো লাগার মানুষকে প্রকাশ্যে প্রস্তাব দিতে দ্বিধা করেননি! হ্যাঁ, তাঁর পদ্ধতি ভুল ছিল, কিন্তু তাঁর আত্মবিশ্বাস ছিল ঈর্ষণীয়।

 তোমার শিক্ষাঃ তোমার অনুভূতিগুলোকে গোপন করার দরকার নেই! ভালোবাসো? স্বপ্ন দেখো? তাহলে এগিয়ে যাও! ভুল করলেও, তুমি শিখবে এবং আরও শক্তিশালী হবে।

৫. নিজেকে নির্ভরশীল করে তুলো না – কৌশল্যাকে মনে আছে?

রাম যখন বনবাসে গেলেন, তখন কৌশল্যা ভেঙে পড়েননি। তিনি তাঁর ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে সমস্ত রাজ্যকে স্থির রেখেছিলেন।

 তোমার শিক্ষাঃ কারও ওপর পুরোপুরি নির্ভর করো না! নিজের পায়ে দাঁড়াও, নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নাও। কারণ তুমি যদি নিজেকে সাহায্য না করো, তাহলে কেউ করবে না!

শেষ কথা – তুমি কী করবে?

এই মহাকাব্যের নারীরা আমাদের শেখায় যে সাহসী হওয়া মানে লড়াই করা নয়, বরং নিজের আত্মসম্মান, সিদ্ধান্ত এবং শক্তির ওপর বিশ্বাস রাখা। এখন প্রশ্ন হলো – তুমি কী করবে?

তুমি কি তোমার ভয়ের কাছে হেরে যাবে? নাকি রামায়ণের নারীদের মতো আত্মবিশ্বাসী হয়ে সামনে এগিয়ে যাবে?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top